ইংরেজিতে একটি প্রবাদ খুব প্রতিষ্ঠিত যার বাংলা মানে করলে দাঁড়ায়, মানুষ কখনও একা থাকতে পারে না। মানুষ যে একা থাকতে পারে না তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ড্যানিয়েল ডিফোর বিখ্যাত উপন্যাস রবিনসন ত্রুসো। যারা উপন্যাসটি পড়েন নি তারা এর চলচ্চিত্রায়ন দেখে নিতে পারেন। একজন সঙ্গীর জন্যে, একজন মানুষের জন্যে রবিনসনের সে কি আকুতি!
মানুষের বেঁচে থাকবার জন্যে মানুষে মানুষে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্ককে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে সমাজ, রাষ্ট্র আর নিয়ম কানুন। তৈরি হয়েছে সম্পর্কে কি করা যাবে কিংবা কি করা উচিত নয় সেসব বিধি। তবে বিধি দিয়ে তো সম্পর্ক বানানো যায় না- সম্পর্ক বানায় মানুষ। ফলে সম্পর্ক গড়ে তোলার মধ্যে যে বিষয়টা কাজ করে সেটি হলো ভাতৃত্ববোধ। মানে হলো ভাইয়ের মতো, আপন বড়। সম্পর্কে থাকে টান, মায়া, আন্তরিকতা, ভালোবাসা। একে অন্যকে আঁকড়ে ধরে জীবনের পথচলা। সেটি ভাই, বন্ধু, স্ত্রী, সন্তান, প্রতিবেশী, স্বজন, সহকর্মী- সকলেই।
সম্পর্ক প্রয়োজনের ওপর তৈরি হয় না। সম্পর্ক তৈরি হয় মানুষের মানবিকতা দিয়ে। আমার বন্ধু-প্রতিবেশী বিপদে আছেন-তার আমাকে প্রয়োজন। তার প্রয়োজনে আমি ছুটে যাব। এইটিই মানবিকতা। এইটিকে প্রয়োজন বলা যাবে না।
কিন্তু বারো রকমের মানুষের এই পৃথিবীতে কেউ কেউ প্রয়োজনের জন্যেও সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তার যদি আপনাকে প্রয়োজন না হতো তাহলে তিনি হয়ত কখনও আপনার সঙ্গে কথা বলতেও আসতেন না। এদের জন্যে বাংলা অভিধানে দারুণ একটি শব্দ আছে- ‘স্বার্থপর’।
এই মানুষগুলোকে আমার কাছে অদ্ভুত লাগে খুব। এদের ভাবনা, যৌক্তিকতা আর নানান দিক জানতে ইচ্ছা করে। মানুষকে প্রয়োজন হিসেবে বিবেচনা করে! কেমন মানুষ এরা!