মানুষ অপেক্ষা নিম্ম স্তরের প্রাণীদের ইতর প্রাণী বলে। আরো সহজ করে বললে,ভালো-মন্দ বিচার করার ক্ষমতা যাদের নেই সেই সমস্ত প্রাণীদের ইতর প্রাণী বলে। মানুষ ব্যাতীত অন্যান্য সকল প্রাণী ইতর প্রাণীর আওতাভুক্ত।
অনেক কুকুর দেখলে ভয় পান। তার ভয় থাকে কুকুরটি হয়ত তাকে কামড়ে দেবে। কিন্তু সত্যটি হলো কুকুর মানুষ দেখলেই কামড়ে দিতে ছুটে আসে না। তবে ঘেউ ঘেউ করে বটে। অনেকে বলেন, ঘেউ ঘেউ করা কুকুরের স্বভাব। তাহলে কুকুর কি মানুষ দেখলেই ঘেউ ঘেউ করে?
বিজ্ঞান অবশ্য ভিন্ন কথা বলছে। মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ এক বন্ধু বলল, কুকুরের ঘ্রাণশক্তি খুবই প্রবল। মানুষের দেহ থেকে নানান রকমের গন্ধ বেরয়। সে গন্ধটি হয়ত কুকুরের কাছে সন্তোষজনক মনে হচ্ছে না। ফলে কুকুরটি ওই মানুষটিকে ভালোভাবে নিচ্ছে না এবং চিৎকার করে সেটিই জানাচ্ছে।
কুকুর মানুষের পরম বন্ধু বলে স্বীকৃত। তাকে যদি আপনি একবার বন্ধু বানিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে সে সারাজীবনই আপনার বন্ধু হয়েই থাকবে। কিন্তু আপনার মানুষ-বন্ধুটির বেলায় এই নিশ্চয়তাটা নেই। না থাকার কারণ হলো মানুষ নিজের মধ্যে কৃত্রিমতা ধারণ করে। মানুষ কখনও নিজেকে মেলে ধরে না। তা হোক সে সম্পর্ক বন্ধুত্বের কিংবা আরও কিছু। এতে অবশ্য ক্ষতি নেই। একান্ত ব্যক্তিগত অনেক কিছুই থাকে আসলে। সেসব সকলকে জানিয়ে বেড়াবার দরকার কি!
কিন্তু সমস্যা তখনই বাধে যখন বন্ধুটি আর বন্ধু থাকে না। সে সমস্যা আরও গাঢ় ও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে যখন বন্ধুটি বন্ধুত্বকে ভুলে শত্রু হয়ে আবির্ভূত হয়। আমরা তো সমাজবদ্ধ জীব। মানুষকে বাদ দিয়ে আর চলা যাবে না। মানুষ থেকে সাবধান হওয়া দরকার, ইতর প্রাণি কুকুর থেকে নয়।
শেষ কথাটা হলো, মানুষ মানুষের কৃত্রিম বন্ধু যদি মানুষটি মানুষ না হয়ে থাকে। মানুষের জীবনে সবচেয়ে জরুরি ও কঠিন কাজটির নাম- মানুষ হয়ে ওঠা। বেশিরভাগ মানুষেরই পুরো জীবন চলে যায় কিন্তু তার মানুষ হওয়া হয়ে ওঠে না। কেউ কেউ জানতেও পারে না যে সে দেখতে মানুষের মতো বটে কিন্তু মানুষ হতে পারে নি।