একটা সময় ছিল যখন সম্পর্ক মানে ছিল নিঃস্বার্থ অনুভব, নির্ভরতা, পাশে থাকার অঙ্গীকার। কিন্তু আজকাল অনেক সম্পর্কই দাঁড়িয়ে থাকে সুবিধা আর প্রয়োজনের উপর। চোখের চাহনি, কথার নরমতা বা হাসির ভেতরেও লুকিয়ে থাকতে পারে হিসেবের খাতা।
আমি এই কথাটি অনেক আগে শুনেছিলাম:
“সম্পর্ক তৈরি হওয়ার আগে নিশ্চিত হন, আপনি তার প্রিয়জন, প্রয়োজন নন।”
তখন হয়তো পুরোটা হৃদয় দিয়ে বুঝিনি। কিন্তু সময়ের পরত পরত অভিজ্ঞতা জমে গিয়ে আজ বুঝি—এই কথার গভীরতা কতটা বিস্তৃত।
আমরা যখন কাউকে খুব আপন ভাবি, প্রতিদিন খোঁজ নিই, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিই—তখন কি আমরা নিশ্চিত থাকি যে, সেই মানুষটিও আমাদের একই চোখে দেখে? নাকি আমরা তার জীবনে কেবল একটি সুবিধাজনক নাম, একটি সময়ভিত্তিক প্রয়োজন?
প্রয়োজন ফুরালে যারা চলে যায়, তারা আসলে কখনো ছিল না।
কিন্তু আমরা ভুল করে তাদের ‘থাকার মানুষ’ ধরে নিই।
এই ভুলটাই সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেয়।
আমি নিজেও সেই যন্ত্রণার পথ ধরে হেঁটেছি।
কেউ যখন আপনার খোঁজ নেয় শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময়ে—তখন একসময় আপনি উপলব্ধি করেন, আপনি হয়তো তার জীবনের কোনো অনুভব নন, বরং এক ‘সুবিধাজনক উপস্থিতি’।
আর তখনই মন প্রশ্ন করে—এই সম্পর্কের আসল রূপ কী?
আমরা সবাই চাই—কেউ একজন আমাদের আপন মনে করুক।
কারো জীবনে আমাদের উপস্থিতি হোক অনুভবের মতো, প্রয়োজনের মতো নয়।
তাই আজ নিজেকে বলি,
কাউকে আপন করার আগে একটু থেমে ভাবো—
তুমি কি তার জীবনে প্রিয়জন, নাকি কেবল প্রয়োজন?
এই প্রশ্নটাই হয়তো আমাদের বাঁচিয়ে দিতে পারে একতরফা সম্পর্কের যন্ত্রণা থেকে।
হয়তো না-জেনে ভালোবাসায় ডুবে যাবার আগেই এই উপলব্ধি আমাদের আত্মমর্যাদাকে রক্ষা করতে পারবে।
⸻
শেষ কথা:
ভালোবাসা তখনই অর্থবহ, যখন তা দু’জনের হৃদয়ের ভাষায় প্রকাশ পায়—না যে কেবল প্রয়োজন, না যে কেবল উপস্থিতি—বরং এক অনুভব, যেটা সময়ের সীমানা পেরিয়ে পাশে থাকে।
ভালো থাকবেন🤗ভালোবাসবেন।
