প্রশংসা শব্দটি দুটা অর্থ বোঝায়- একটি হলো সুখ্যাতি, অন্যটি সাধুবাদ। দুটোই অর্জন। কিন্তু এই অর্জনে পার্থক্য রয়েছে। যেমন সুখ্যাতি বললে আমরা বুঝি সুনাম, যশ, খ্যাতি কিংবা প্রসিদ্ধি। আর সাধুবাদ হলো আপনি যখন কারও ওপর হৃষ্ট হলেন, বা ধরুন কারও আচরণে হর্ষান্বিত কিংবা আনন্দিত হলেন। সেই আনন্দের পুলকে তার প্রতি কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করলেন- এইটিই প্রশংসা।
সেকারণে প্রশংসা শব্দটির আকৃতি মাত্র সাড়ে তিন শব্দের হলেও এর ব্যাপ্তি বিশাল। তবে এই বিশালতা ব্যক্তিকে ছাপিয়ে যায় না কখনও, বরং ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে অন্যদের সামনে উপস্থাপন করে। পরিচয় করিয়ে দেয় সকলের সঙ্গে।
অন্যদিকে ঈর্ষা হলো পরশ্রীকাতরতা। পরশ্রীকাতর ব্যাপারটা খুব মজার। অন্তত আমার কাছে খুব মজা লাগে। বিষয়টা হলো ধরুন দেখলেন কেউ একজন দারুণ সুন্দর দেখতে। তাকে দেখে আপনার বুকটা হাহাকার করে উঠে বলতে লাগল- আমি কেন অমন সুন্দর না! তখন আপনার খুব রাগ হলো। এই রাগ নিজের ওপর তো বটেই, ওই সুন্দর মানুষটির ওপরও। আপনি তাকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেললেন। প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলে সকলকে দেখাতে-বোঝাতে চেষ্টা করতে থাকলেন আপনার শ্রীও আসলে ওর চেয়ে কোনো দিক থেকে কম নয়। বস্তুত আপনিই ওর চেয়ে বেশি সুন্দর। তারপর সেই বেশি বেশি সৌন্দর্য প্রমাণ করতে নানান রকমের অদ্ভুত সব কাজকর্ম করতে থাকলেন। ঈর্ষা তখন আর ঈর্ষা থাকে না, হিংসা হয়ে ওঠে। তার সঙ্গে সঙ্গে পরাজয় ঘটতে থাকে ব্যক্তির। এ পরাজয় আর কারও কাছে নয়- নিজের কাছে নিজের পরাজয়।
পৃথিবীর সবচেয়ে করুণ পরাজয়।