ধার্মিকের পেছনে যখন লুকায় লোভ!

— সম্পর্ক, ধর্ম এবং বাস্তবতার এক আন্তরিক বিশ্লেষণ

0 comments 139 views 4 minutes read

মানুষের পরিচয় কেবল তার কথায় নয়—প্রকৃত চরিত্র ধরা পড়ে তার আচরণে, বিশেষ করে বিপদের সময়।
আজকের গল্পটি এমন দুই বন্ধুর—যেখানে ধর্ম, সম্পর্ক আর নৈতিকতার গভীর এক দ্বন্দ্ব ধরা পড়ে।

গল্পের শুরু: এক অটুট সম্পর্কের ভিত

দুই বন্ধু।
একজন নিজেকে বলেন ‘ধার্মিক’। নিয়মিত নামাজ, রোজা, ধর্মীয় অনুশাসন পালন করেন।
অন্যজন নিজেকে ভাবেন ‘ধর্মবিশ্বাসী’। তিনি হয়তো ঠিক ততটা আনুষ্ঠানিক নন, কিন্তু ধর্মকে ধারণ করেন জীবনের নৈতিকতার ভিত হিসেবে।

তারা একসঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন।
মুনাফা, ভাগাভাগি—এসব নিয়ে কোনোদিন কোনো টানাপোড়েন হয়নি।
ধীরে ধীরে সম্পর্কটা শুধু ব্যবসায়িক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকেনি— পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা, আস্থা আর সম্মান গড়ে ওঠে।
একটি সময়, তারা ছিলেন একে অপরের আত্মার আত্মীয়ের মতো।

হঠাৎ যখন ঝড় আসে…

তবে সময় তো কখনো একরকম থাকে না।
ব্যবসায় আসে বিপর্যয়—জটিলতা, ক্ষতি, অনিশ্চয়তা।
ধর্মবিশ্বাসী বন্ধুটি বিপাকে পড়েন।
তিনি ভাবেন— কীভাবে বলবেন ‘এই মুহূর্তে লাভ ভাগ করে দেওয়ার মতো অবস্থায় আমি নেই’?
কীভাবে বোঝাবেন, এটা চুরি বা অসততা নয়—এটা কেবল বাস্তবতা?

কিন্তু তার আগেই ঘটে অপ্রত্যাশিত কিছু

তিনি কিছু বলার আগেই, ‘ধার্মিক’ বন্ধু বলে বসেন:

“ভাই, লাভ-লোকসান বুঝি না।
আমি যেমনভাবে এতদিন লাভ পেয়েছি, এখনো তেমনটাই চাই।
না হলে তোমার সঙ্গে আমার আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না!”

এই একটি বাক্যে যেন সব কিছু বদলে গেল।
সেখানে ছিল দাবি, চাপ, এবং সম্পর্ক ভাঙার হুমকি।
এটা কি সত্যিই ধর্মের চেহারা?
ধর্ম কি এই শিক্ষা দেয়— ‘যদি আমার প্রাপ্তি না থাকে, সম্পর্কের দরজা বন্ধ’?
নাকি ধর্ম শেখায় ক্ষমা, সহানুভূতি, সময় বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া?

ভাবনার জায়গা: ধর্মের আসল রূপ কোথায়?

এই গল্পটা কেবল দুই বন্ধুর সম্পর্কের নয়।
এটা আমাদের চারপাশের বহু সম্পর্ক, বহু ‘ধার্মিক’ মুখোশের প্রতিচ্ছবি।
কখনো কখনো আমরা এমন আচরণ দেখি যেখানে ধর্মকে ব্যবহার করা হয় নিজের সুবিধা আদায়ের অস্ত্র হিসেবে।

কিন্তু সেই ধর্ম কোথায়, যেটা বলে:
• “দুঃখে বন্ধু চিনতে হয়”?
• “সত্যিকারের ধার্মিক সেই, যে দুর্দিনে দাঁড়ায় পাশে”?

এখন প্রশ্নটা আপনার দিকে:
1. আপনি হলে ধর্মবিশ্বাসী বন্ধুটি কী করতেন?
2. সম্পর্ক, ধর্ম, আর বাস্তবতার টানাপোড়েনে—কোন পথটা আপনাকে সত্যের দিকে টেনে নেয়?
3. ধর্ম কি শুধুই প্রথা? নাকি জীবনের দায়িত্ব ও সহমর্মিতার নাম?

শেষকথা:

ধর্ম যদি ভালোবাসা, সহনশীলতা, ও সততার শিক্ষা না দেয়—
তবে সেটা কেবলই আড়াল, এক ধরণের শূন্য আবরণ।

এই গল্পটি আপনার হৃদয় ছুঁয়ে থাকলে, নিজের মতামত জানান মন্তব্যে।
আরও মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে, গল্পটি শেয়ার করুন।

ভালো থাকবেন 🤗 ভালোবাসবেন।

Leave a Comment

You may also like

Copyright @2023 – All Right Reserved by Shah’s Writing