আমার ভাবনায় আমার নারী!

0 comment 113 views

কলম হাতে নিয়ে খাতায় একটা রেখা টানুন তো। সেই যে ছেলেবেলায় অংক খাতায় রেখা টানতেন না, সেভাবে। রেখা টানা হলে দুই রেখায় কতটা তফাৎ দেখুন তো! অথচ দুটো রেখাই আপনার আঁকা। পার্থক্য শুধু সময়ের, তাইনা?

আমাদের জীবনে সবচেয়ে দামি জিনিসটিই সময়। সময়টাই হলো শৈশব বাল্য কৈশোর আর তারুণ্য থেকে প্রবীণ কিংবা বৃদ্ধকাল। এটাকে আপনি এড়িয়ে যেতে পারেন না। কেউই পারে না। কিন্তু সময় আসলে কি? বিজ্ঞান জানাচ্ছে, মানুষ সর্ব প্রথম সময়ের ধারণা মূলত দিন ও রাতের নিয়মিত আবর্তন থেকে বের করে। পৃথিবীর নিজ অক্ষে একটি পূর্ণ আবর্তন সম্পন্ন করতে প্রায় ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। আর সূর্যকে ঘিরে কক্ষপথে পৃথিবী ঘোরার সময় একই ঘটনা দুইবার ঘটার মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো বছর। এরপর নিউটন এসে জানালেন অ্যাবসলিউট টাইম ও স্পেস। তারও অনেক পরে আইনস্টাইন এসে সময়ের আপেক্ষিকতার কথা।

কিন্তু ওসব তো অনেক বড় বড় মানুষদের ব্যাপার। আমি ওসব নিয়ে বলতে পারব না। আমার কথাটা হলো আমাদের সময়, অর্থাৎ বয়স নিয়ে। প্রতিনিয়তই আমাদের বয়স বাড়ছে। আমরা রোজই একটু একটু করে বৃদ্ধ হচ্ছি। প্রশ্ন হলো এই উপলব্ধির জায়গা থেকে আমরা আমাদের সময়ের ব্যবহারটা ঠিকমত করছি? আমি মনে করি বয়স প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হলো সময় নষ্ট না করা।

বয়স তো বাড়ছেই। চেহারাতেও বয়সের ছাপ এসেছে। কিন্তু তাই বলে কি সৌন্দর্য কমছে বলে মনে হয়? আগের মতো শারীরিক ক্ষমতা অথবা চঞ্চলতা হয়ত নেই, আগের মতো হাসি নেই, শরীরে মেদ জমেছে- এমনই তো হওয়ার কথা ছিল, তাই না? তাহলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু হারিয়ে গেছে কেন ভাবছেন? বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে অভিজ্ঞতা যোগ হয়ে আপনার সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে- এমন করে কেন ভাবছেন না?

আপনি কি জানেন “বয়স কাকে বলে?” প্রশ্নটির উত্তর হলো, “ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি তথা অতিক্রান্ত বছর সমষ্টি”? এই ক্রমবর্ধমান অগ্রগতিকে আপনি হতাশা নিয়ে দেখছেন কেন?

পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে নারীর বয়স বেড়ে যাওয়ায় একটা পার্থক্য আছে। এই পার্থক্যটি শুধুই বাহ্যিক। কেননা নারী সন্তান ধারণ করেন, সন্তানের জন্মের পর নিজের যত্ন না নিয়ে সন্তানের দিকেই তার মনোযোগ থাকে। ফলে একই বয়সের হওয়া সত্ত্বেও নারীকে একটু বেশি বয়স মনে হয়। তাছাড়া আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের কাছে সংসার অনেক বড় একটা জায়গা নিয়ে থাকে। নিজের সবটুকু উজাড় করে সংসারে ঢেলে দেয় তারা। সংসারের প্রত্যেকটা সদস্যের ভালো-মন্দের দায় নিজেই নিয়ে নেয়। সেকারণেও নিজের দিকে তাকাবার সময় থাকে না তার।

এই নারীদের লক্ষ্য রাখার দায়িত্বটা কিন্তু আমাদেরই। তারা যে একটু বিশ্রাম নিতে পারে, চুলে চিরুনিটা একটু বোলাতে পারে, সামান্য সাজগোজ যেন করতে পারে, নিজেকে ঠিকঠাক রাখতে যা যা করা দরকার সেটুকু যেন করে- এই লক্ষ্যটি আমাদের, মানে পুরুষদেরকেই রাখতে হবে। কেননা ভুলে গেলে চলবে না- আপনি যত যাই করুন নে কেন আপনার ঘরের নারী সঙ্গীটি যদি থাকতেন তাহলে আর যাই হতো বা না হতো- সংসারটা আপনার হতো না।

আমার ক্ষেত্রে আমি তো অন্তত সেটিই মনে করি? আমার তুমি তাই সেই আমার তুমিই আছে। আপনার ক্ষেত্রে? আপনার কি অভিমত?

Leave a Comment

You may also like

Copyright @2023 – All Right Reserved by Shah’s Writing