ভালোবাসা

0 comment 93 views

ভালোবাসার কোনও ব্যাখ্যা আসলে হয় না। রবীন্দ্রনাথও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সখি ভালোবাসা কারে কয়?’ জানতে চেয়েছেন, ভালোবাসার শরীর জুড়ে কি শুধুই যন্ত্রণা?

বস্তুত ভালোবাসা একটি অনুভূতির নাম। এই অনুভূতির প্রাথমিক উৎপত্তিটি দেখা হওয়া থেকে। দেখা হলে পরেই তৈরি হয় আকর্ষণ। তাহলে দেখা যাচ্ছে, ভালোবাসার মূল উপজীব্য হলো আকর্ষণ। তাহলে একটা মানুষের প্রতি আরেকটা মানুষের যে আকর্ষণ থাকে সেটাকেই আমরা ভালোবাসা বলি। আকর্ষণ হলো টান। একটা কিছু ওই মানুষটার দিকে এই মানুষটাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে- এটাই মূল ব্যাপার। এই টান আসে প্রলুব্ধ হওয়া থেকে। মানুষটার ভেতরের অজানা কিছু তাকে প্রলুব্ধ করছে, তাকে টানছে, টেনে বারবার তার কাছেই নিয়ে যাচ্ছে। মোটামুটি ভাবে মানুষের আকর্ষণকে চারটি ভিন্ন ভিন্ন অংশে ভাগ করা যেতে পারে— শরীর, চেহারা, যোগ্যতা আর মন। কিন্তু মনকে তো আর দেখা যায় না, তাকে অনুভব করতে হয়। সেও ওই অনুভূতিইর দায়।

সায়েন্স বী ব্লগ তাদের সাইটে তত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগে লিখেছে, “নারীপুরুষ আকর্ষণের জৈবিক মডেলকে স্তন্যপায়ী প্রাণীর বংশবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে একটি ড্রাইভ অর্থাৎ তাড়না হিসাবে মনে করা হয় যা ক্ষুধা বা তৃষ্ণার মতো। আকর্ষণের জৈবিক কারণ হিসাবে নিউরাল সার্কিটগুলি, নিউরোট্রান্সমিটার সবসময় কার্যকর ভূমিকা পালন করে।”

দেখুন, এখানে অনুভূতি, আবেগ কিংবা মনের কোনো জায়গা নেই কিন্তু। যা আছে তার সবটুকুই খটমটে বিজ্ঞান। অনুভূতি, আবেগ বা মনের কোনো জায়গা থাকার কারণ হলো, এদের কোনো অস্তিত্ব নেই। এরা আছে শুধুই আমাদের ধারণার ওপর ভিত্তি করে। মজার ব্যাপার হলো, বিজ্ঞান যে আজ এত দূর আসতে পেরেছে, সেও ওই ধারণার ওপর দাঁড়িয়েই।

তাহলে পুরুষ কি নারীর দিকে অথবা নারী যে পুরুষের আকর্ষিত হয়, তার সবটাই কি কেবলই যৌনতার প্রয়োজনে? সায়েন্স বী ব্লগের সাইটের তত্ত্ব ও গবেষণার বিভাগের এই তথ্য কি ভুল?

মোটেও ভুল নয়। কিন্তু সবটাই কি কেবলই যৌনতার প্রয়োজনে নয় আসলে। নয় বলেই ভালোবাসার জন্যে মানুষ একশ’ আটটা নীল পদ্ম খুঁজে আনে, নয় বলেই সাত সাগর পাড়ি দেয়, নয় বলেই সকলের বিরুদ্ধে গিয়ে একটা মানুষের হাত ধরে ঘর ছাড়ে। বিজ্ঞান কখনও এটা বুঝবে না। বিজ্ঞানের এসব বোঝার দরকারও নেই। কেননা ভালোবাসাটা মানবিক। যান্ত্রিক নয়।

Leave a Comment

You may also like

Copyright @2023 – All Right Reserved by Shah’s Writing