পরের ক্ষতিতে এখন আনন্দের নেশা

0 comments 66 views 2 minutes read

এটাই কি তবে আমাদের সময়ের নতুন পেশা?

আমরা কি আর মানুষ আছি?

এই প্রশ্নটাই আজ বারবার ঘুরে ফিরে আসে—বিশেষ করে তখন, যখন দেখি একজন মানুষের কান্না, বিপদ বা অপমান আমাদের কাছে আর ব্যথার কারণ নয়, বরং হয়ে উঠেছে বিনোদনের উৎস।

কেউ ভেঙে পড়ছে—আর আমরা হাসছি।
কেউ কষ্টে ছটফট করছে—আর আমরা রেকর্ড করছি।
কারো সর্বনাশ হচ্ছে—আর আমরা বলছি, “ভাইরাল হবে!”

এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে মনে হয়, সহানুভূতি আজ বিলুপ্তপ্রায় শব্দ।
আমাদের মননে জায়গা করে নিচ্ছে এক নতুন সংস্কৃতি—
যেখানে মানুষের যন্ত্রণা আরেকজনের “engagement strategy”।

ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব—সব জায়গায় যেন
আবেগ নয়, অ্যালগরিদম চলে।
মানবতা নয়, মনোযোগ খোঁজা চলে।

মানুষকে মানুষ হিসেবে না দেখে,
দেখা হয় “কন্টেন্ট” হিসেবে।
একজন মা যখন সন্তান হারান—
আমরা তার চোখের জল নিয়ে বানাই রিল।
একজন বৃদ্ধ যখন রাস্তায় পড়ে থাকেন—
আমরা সাহায্যের বদলে লাইভে যাই।

এটাই কি আমাদের সময়ের নির্লজ্জতম পেশা হয়ে উঠছে না?

এইসব দৃশ্যের মধ্যে দিয়ে আমরা নিজেরাই নিজেদের বিবেককে হত্যা করছি,
ধীরে ধীরে এক নির্মমতার সংস্কৃতি গড়ে তুলছি—
যেখানে অন্যের ক্ষতই হয়ে উঠছে আমাদের খেয়াল,
আর পরের দুঃখে পাওয়া হাসিই হয়ে উঠছে আমাদের স্বস্তি।

কিন্তু আমরা কি সত্যিই এর মধ্যে সুখ খুঁজে পাচ্ছি?
নাকি আমরা নিজেরাই এক গভীর শূন্যতায় ডুবে যাচ্ছি—
যার থেকে ফিরতে গেলে দরকার একটিই কাজ:
নিজেকে জিজ্ঞেস করা—আমি কি এখনও মানুষ আছি?

শেষ কথা:
মানবতা একটা ‘ট্রেন্ড’ নয়, এটা আমাদের পরিচয়।
পরের কষ্টকে সম্মান করা মানে নিজের হৃদয়ের আয়নাটা পরিষ্কার রাখা।
এই নেশা থেকে বেরিয়ে এসে যদি আমরা একটু ‘মানুষ’ হই—
তাহলেই হয়তো ভবিষ্যৎ একটু আলোকিত হবে।

Leave a Comment

You may also like

Copyright @2023 – All Right Reserved by Shah’s Writing