স্মার্টফোন কিংবা ইন্টারনেট আসক্তি

0 comment 87 views

ইন্টারনেট তৈরি করা হয়েছিল তথ্যকে সহজলভ্য করতে। কেননা তথ্য মানুষের অন্যতম একটি অধিকার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ সংক্রান্ত আইনও রয়েছে। বাংলাদেশে এ আইনটির নাম তথ্য অধিকার আইন। আমেরিকায় তথ্য অধিকার আইনটি আলোকিত আইন নামে পরিচিত। ইন্টারনেট ঘেঁটে আপনি যে কোনও বিষয় সম্পর্কেই জেনে নিতে পারবেন। এবং ইন্টারনেট ঘাঁটলে এই যে কাঙ্ক্ষিত তথ্যটি পাওয়া- এটি হলো আপনার তথ্য অধিকারের স্বীকৃতি।

প্রযুক্তির বিকাশে এখন ইন্টারনেট এখন আরও সহজলভ্য হয়েছে। এই সহজলভ্যতার ওপর ভিত্তি করে মানুষকে সামাজিক করতে তৈরি করা হয়েছে নতুন এক মাধ্যম- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এসেছে স্মার্টফোন। এবং বিপুল বিক্রমে এরা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, গত বছর বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোনের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২৩০ কোটি। চলতি বছরে এই সংখ্যা কমে যাবে, তা ভাবার কোনো যুক্তি নেই। কারণ, কম্পিউটারের প্রায় সকল কাজই স্মার্টফোন নিজের মুঠোয় পুরে ফেলেছে। বিশেষ করে পৃথিবীর অনুন্নত, স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল অঞ্চলগুলোয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই যন্ত্র। এ বছরের নভেম্বরে মোবাইল ব্যবহারকারী পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, বিশ্ব বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬.৯২ বিলিয়ন।

কিন্তু অন্ধকার তো বাস করে প্রদীপের নিচেই। স্মার্টফোনকে এখন আসক্তি বলে অভিহিত করা হয়। স্মার্টফোনের কারণে তৈরি হচ্ছে পারিবারিক চাপ, মানসিক চাপ এবং মাথার যন্ত্রণাসহ আরও নানান সমস্যা। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, মানুষকে সামাজিক বানাতে, মানুষে মানুষে যোগাযোগ সহক করতে যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তৈরি করা হয়েছিল, সে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন মানুষের পরস্পরের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতার অন্যতম প্রধান কারণ। সোজা কথায় মানুষকে অসামাজিক করে দিচ্ছে। মানুষ বাস্তবতা ছেড়ে অন্তর্জালে সামাজিক হওয়ার অভিনয় করছে। ব্যক্তি জীবনে অভদ্রতা ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভদ্রলোক হওয়ার ভান করে যাচ্ছে। উদাহরণ দিতে হবে বলে মনে হয় না। কেননা এ বিষয়টি সম্পর্কে মোটামুটি সকলেই কমবেশি জানেন বলে ধারণা করি।

একটু যে বললাম, স্মার্টফোনকে এখন আসক্তি বলে অভিহিত করা হয়। আসলে বিশুদ্ধ করে বলতে গেলে বলতে হয় আসক্তিটা আসলে ইন্টারনেট।

মনোবিজ্ঞানীরা মতে, ইন্টারনেট আসক্তি হলো আইএডি- ইন্টারনেট এডিকশন ডিসঅর্ডার। এই আইএডিকে তারা কয়েকটা ভাগে ভাগ করেছেন। যেমন, গেম খেলা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় কাটানো, ব্লগিং করা, ইমেইল আদান প্রদান, নীলছবি দেখা, অনলাইনে কেনাকাটা করা ইত্যাদি। এখন দেখা যাক ইন্টারনেটে যদি কেউ আসক্ত হয় তাহলে কি ঘটে। পেছনে কি কি লক্ষণ থাকতে পারে..

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, আসক্ত ব্যক্তি নিজেকে অপরাধী ভাবতে পারেন। তার মধ্যে বিভিন্ন রকমের হতাশা কাজ করবে। সে সবসময় উদ্বিগ্ন থাকবে। অনেক ক্ষেত্রে অসততাও দেখা যাবে। এমনকি কাজের সময়সুচিও সে ঠিকঠাক বজায় রাখতে পারে না। এছাড়া তার সময়জ্ঞান লোপ পায়, নিঃসঙ্গ বোধ করে, আত্মপক্ষ সমর্থনে আক্রমণাত্মক মনোভাব থাকে আর দায়িত্ব এড়িয়ে চলার প্রবণতা দেখা যায়। এসবের সঙ্গে যুক্ত হয় বিভিন্ন শারীরিক উপসর্গ, যেমন মাথাধরা, ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা, দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি।

Leave a Comment

You may also like

Copyright @2023 – All Right Reserved by Shah’s Writing