সুখ ও সুখী

0 comments 135 views 3 minutes read

ফিনল্যান্ডের মনোবিদ ও সুখগবেষক ফ্রাঙ্ক মারটেলা জানাচ্ছেন, ফিনল্যান্ডের একটি জনপ্রিয় প্রবাদ হলো, ‘সুখ কারও কারও, গ্রীষ্ম সবার’। তিনি আরও জানাচ্ছেন, ফিনল্যান্ডে এ প্রবাদটি প্রায় ১০০ বছর ধরে প্রচলিত। ফিনল্যান্ডের অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, জীবনে এমন কিছু কিছু ঘটনা ঘটে, যা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই। সেকারণে যা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই সেটা নিয়ে কেন অস্থির হবো!

এই বিশ্বাসটি কেবলই যে ফিনিশদের মধ্যে সীমাবদ্ধ- তা কিন্তু নয়। অদৃষ্টবাদী সকলেই এটি বিশ্বাস করেন। যারা অদৃষ্টবাদী নন তারাও দায়টি কালের হাতে অর্পণ করেন।

কিন্তু প্রশ্ন হলো পৃথিবীর সব দেশ থেকে ফিনল্যান্ডের মানুষ কেন এত সুখী?

সুখগবেষক ফ্রাঙ্ক মারটেলা লিখেছেন, যে দেশের মানুষ সুখ খুঁজতে মরিয়া, তাদের মধ্যেই সুখ সবচেয়ে কম। সুখ খোঁজায় খুব বেশি মনোযোগ না দিলেই বরং সুখ এসে ধরা দেয়। এটিই মূলত ফিনিশদের সুখী হওয়ার মূলমন্ত্র।

মানুষকে সুখী করার পেছনে বস্তুত রাষ্ট্রের ভূমিকা প্রধান। সমাজ-পরিবারের ভূমিকা তো আছেই। লক্ষণীয় হলো রাষ্ট্রের ভূমিকার ওপরই নির্ভর করে সমাজ-পরিবারের ভূমিকা। আর একারণেই সুখের যে সূচক রয়েছে, সেখানে তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো থাকে পিছিয়ে। কেননা তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোতে সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, সুবিচার, মোট কথা কোনও মৌলিক অধিকারেরই নিশ্চয়তা নেই। ফলে এখনও পর্যন্ত তৃতীয় বিশ্বের কোনও রাষ্ট্র সুখী দেশের সূচকে শীর্ষে উঠতে পারে নি। তলানিতেই আটকে আছে।

ফ্রাঙ্ক মারটেলা থেকে ধার করে আরেকটি প্রবাদ বলা যাক- ‘মানুষ নিজেই নিজের সুখের কারিগর’। এই প্রবাদটি ফিন ফিনল্যান্ডের নয়। এটি এসেছে প্রাচীন রোম থেকে। কিন্তু ফিনল্যান্ডের মানুষদের কাছে জনপ্রিয়। কেননা এদেশের মানুষ খারাপকে বর্জন ও ভালোকে গ্রহণ করার মানসিকতা ধারণ করেন।

নিজেই নিজের সুখের কারিগর অর্থ হলো জীবনের সুখের দায়িত্ব আপনারই, অন্য কারও নয়। তবে তার আগে রাষ্ট্রকে তার ভূমিকা পালন করতে হবে। রাষ্ট্র দুর্নীতিগ্রস্ত হলে নাগরিক যতই দায়িত্ব নিক- সুখী সে কি করে হবে?

Leave a Comment

You may also like

Copyright @2023 – All Right Reserved by Shah’s Writing