বলুন তো মানুষের জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসটি কি?
মূল্যবান জিনিসটি হলো সময়। আপনি যত সম্পদেরই মালিক হোন না কেন আপনার সময়টি যদি সংকুচিত হয়ে থাকে তাহলে ওই বিপুল সম্পদ বস্তুত কোনো অর্থই বহন করবে না।
আমাদের স্কুল পাঠ্যবইতে “সময় চলিয়া যায়-নদীর স্রোতের প্রায়” লাইন দুটো দিয়ে বলা হতো ভাবসম্প্রসারণ করো। আমরা তখনও জানতাম না ওটা যোগীন্দ্রনাথ সরকারের কবিতা থেকে নেওয়া। ‘কাকাতুয়া’ কবিতাটিও আমাদের পড়া ছিল না। না জেনে, না পড়েই আমরা খাতায় এত এত কথা লিখে দিয়ে আসতাম। এবং বলাবাহুল্য সেসব কথার প্রায় সবই বই পড়ে মুখস্ত করা হতো। আমরা পড়েছি সময় নদীর স্রোতের মতো প্রবাহিত হতেই থাকে, থামে না কখনও। পড়ি নি সময়কেও আমাদের সময় দিতে হবে। তাহলে সময়ও একদিন তাকে দেওয়া সে সময় আমাদেরকে ফিরিয়ে দেবে। পড়ি নি আমাদের জীবন আসলে সময়ের থেকে ঋণ নিয়েই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।
টিম ট্যাভসনের একটা গান আছে, লাইফ ইজ আ গ্রেট জার্নি। সে গানে টিমের জানাচ্ছে, মনের পাহাড়ে চড়া বড় কঠিন বটে। টিম তাই পুরনো হারিয়ে যাওয়া মনের অনুভূতি নিয়ে এগিয়ে যেতে বলছে- হতাশাকে ঠেলে সরিয়ে এভাবেই এগুতে বলছে। কেননা ‘লাইফ ইজ আ গ্রেট জার্নি। আমরা দেখি, টিম ট্যাভসন একজন আশাবাদী মানুষ।
কিন্তু কথাটি টিম ট্যাভসন বলেন নি সেটি হলো, জীবন শুধু দারুণ একটি ভ্রমণ নয়, জীবন একটি দীর্ঘ ভ্রমণও বটে। বড় সুদীর্ঘ জীবনের ব্যাপ্তি। তা বয়সের হিসেবে জীবন তা যত সংক্ষিপ্তই হোক না কেন। জীবনের সঠিক মূল্যায়ন আপনি তখনই করতে পারবেন যখন আপনার কাছে মূল্যবান সম্পদ হয়ে উঠবে- আপনার নিজের নয় শুধু, অন্যেরও।
ঠিক একারণেই অন্যের সঙ্গে দূরত্বটা ঘুচিয়ে ফেলা জরুরি। মানুষে মানুষে দুরত্বই তৈরি করে বিভেদ। এই বিভেদই তৈরি করে শ্রেণিভেদ। শ্রেণিভেদ আঙুল তুলে দেখায় উত্তল অবতল। তখন মানুষে মানুষে দুরত্বের দাগটি মোটা হতে থাকে ক্রমশ। বানায় স্তর- নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত আর উচ্চবিত্ত। এই স্তর বড় নিম্নমানের স্তর। কথা হলো মানুষে মানুষে ভেদাভেদ থাকবেই। কিন্তু এই ভেদাভেদ যেন বিত্তের ভিত্তিতে না হয়- এই চেষ্টাটি আমাদেরকে করতে হবে। আসুন আমরা বিভেদের এই নিম্নমানের স্তরটি আমরা ঘোচাই।
চলুন দূরত্বটি কাটাতে প্রতিদিন কমপক্ষে একটি পদক্ষেপ নেওয়া যাক।