বিক্ষত-উপেক্ষিত এক জনপদের নাম মনিপুর

0 comments 38 views 3 minutes read

গত সেপ্টেম্বরে ডেকান হেরাল্ড লিখেছিল মণিপুরে যুদ্ধাবস্থা চলছে।

টানা দুই বছর ধরে মণিপুরে চলেছে জাতিগত জাতিগত সংঘাত। সামাজিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। সহিংসতা, দ্বন্দ্ব আর বিচ্ছিন্নতায় আটকে গেছে মণিপুরের মানুষদের স্বাভাবিক জীবন। মেইতি ও কুকি অঞ্চলে মণিপুর বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই দুই অঞ্চলের মধ্যে সন্দেহ ও শত্রুতাই বিভাজন রেখাও টেনে দিয়েছে।

মণিপুরকে ‘সচল’ করতে পুলিশ ও সেনার যৌথ দল নেমেছিল, কিন্তু অবস্থার কোনও উন্নতি হয় নি। দুই বছর পেরিয়ে গেল মণিপুরের সামাজিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। কবে যে স্বাভাবিক হবে সে ব্যাপারে কারও স্পষ্ট কোনও ধারণা নেই।

দুই বছর ধরে সহিংসতা, দ্বন্দ্ব আর বিচ্ছিন্নতায় আটকে আছে মণিপুরের লক্ষ মানুষের জীবন। কিন্তু দুঃখজনক হলো, প্রধানমন্ত্রী মোদী বা কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুরকে স্বাভাবিক করতে কার্যত কোনও ভূমিকাই রাখছেন না।

দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোদীর যে মণিপুরে যাওয়া উচিত, শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখা উচিত এবং একজন প্রধানমন্ত্রীর সাংবিধানিক দায়িত্ব- এটিই যেন মোদী জানেন না!

এই অনুপস্থিতি শুধু রাজনৈতিক উপেক্ষা নয়, এটি একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার নির্মম দৃষ্টান্ত। শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর মধ্যস্থতা হয়নি, সময়মতো রাষ্ট্রপতি শাসনের প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষিত হয়েছে, এবং সবচেয়ে বড় কথা—রাজ্যের ঐক্য রক্ষা করার ন্যূনতম চেষ্টাটুকুও দৃশ্যমান নয়।

এখনও শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। কত মানুষ মারা গেছে তার সুনির্দিষ্ট কোনও হিসাব নেই। হাজার হাজার মানুষের ঠিকানা হয়েছে ত্রাণ শিবির।

রাষ্ট্রের পরিচালক হিসাবে মানুষের অবর্ণনীয় এই দুর্ভোগের দায়ের সবটাই কেন্দ্র সরকার আর বিজেপির। মণিপুরের প্রতি তাদের এই উপেক্ষা আর অবহেলা প্রতিদিনই মণিপুরের সমস্যাকে আরও গভীর করে তুলছে। এ শুধু একটি রাজ্যের সংকট নয়—এটি ভারতের সংবিধান, মানবতা ও নেতৃত্বের এক কঠিন পরীক্ষার মুহূর্ত।

ডেকান হেরাল্ড মণিপুরের যে যুদ্ধাবস্থার লিখেছিল, সে বাস্তবতা দুই বছরে তেমন পাল্টায় নি। পাল্টাবে কিনা সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। মোদী তো এখন পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বাধাতে ব্যস্ত। অথচ ভারতের ভেতরেই যে প্রায় গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে- সেটি নিয়ে তার কোনও মাথাব্যথা নেই। দুই বছর ধরেই নেই।

Leave a Comment

You may also like

Copyright @2023 – All Right Reserved by Shah’s Writing