বাবার চোখে মুক্তিযুদ্ধ: সেক্টর ২-এর এক সাহসী সন্তান

0 comments 29 views 2 minutes read

আমার বাবা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুক্ত হন সেক্টর ২-এ—যার নেতৃত্বে ছিলেন মেজর খালেদ মোশাররফ। এই সেক্টর ছিল দেশের হৃদপিণ্ড ঢাকা ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলকে ঘিরে, যেখানে প্রতিটি দিন ছিল একেকটি যুদ্ধের গল্প।

বাবা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ট্রেনিং শেষ করে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। সাহস, নেতৃত্বগুণ এবং অপরিসীম দেশপ্রেমের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন সেক্টর ২-এর অন্যতম নির্ভরযোগ্য যোদ্ধাদের একজন। শত্রুর ঘাঁটিতে গেরিলা হামলা, রসদের পথ কেটে দেওয়া, তথ্য সংগ্রহ—সব কিছুতেই তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সহযোদ্ধারা আজও তার নাম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

যুদ্ধের পরে দায়িত্বের নতুন অধ্যায়

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, অনেকেই ফিরে গিয়েছিলেন নিজ জীবনে। কিন্তু আমার বাবা ফিরেছিলেন আরও বড় দায়িত্ব নিয়ে—
তিনি যোগ দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে।
সেখানে তিনি দেশের নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও আত্মমর্যাদার রক্ষায় কাজ করে গেছেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।

তিনি শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না, ছিলেন একজন আদর্শ সৈনিক—যিনি দেশের প্রতি দায়িত্বকে নিজের জীবনের সঙ্গে একাত্ম করে নিয়েছিলেন।

শেষ বিদায়ে রাষ্ট্রের শ্রদ্ধা

বাবার মৃত্যুর পর, রাষ্ট্র তাকে সম্মান জানায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন দিয়ে।
তার এই আত্মত্যাগ ও জীবনভর দেশসেবা কেবল একটি ব্যক্তির নয়—এটি একটি পরিবারের অহংকার, একটি জাতির শ্রদ্ধা।

আমাদের পরিবারও বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে সম্মাননা ও স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু এসব স্বীকৃতির ঊর্ধ্বে, আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় গর্বের বিষয় হলো—
আমাদের বাবা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন দেশপ্রেমিক, একজন সত্যিকারের বীর।

ভালো থাকবেনভালোবাসবেন।

Leave a Comment

You may also like

Copyright @2023 – All Right Reserved by Shah’s Writing