অনেকেই মনে করেন লেখক নানান কৌশলে সাহিত্য কিংবা সৃজনশীল লেখালেখি করেন নিবন্ধ যাতে মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। লেখালেখির ক্ষেত্রে লেখকের অভ্যন্তরে একটি দায়িত্ববোধ কাজ করে বটে কিন্তু এই দায়িত্ববোধই সবটা নয়। মূল ব্যাপারটা হলো তাগিদ। কোনো একটি বিষয়ে লেখক যখন মনে করেন এইটি নিয়ে তার বলা দরকার, তখন তিনি নিজের ওই দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে নিজের চিন্তা, যুক্তিবোধ, জ্ঞানে ও সর্বোপরি আপন ভাষা আঙ্গিকে আপন ভাবনাটি তুলে ধরেন। আর পাঠক তখন নিজের জায়গা ও যৌক্তিক অবস্থান থেকে সে লেখালেখি-ভাবনাকে মূল্যায়ন করেন।
সমাজে নানান ক্ষেত্রে অনেক অসাধু মানুষ রয়েছেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো একজন পাঠক কখনও অসাধু হন না। সত্যিকারের পাঠক যিনি তিনি লেখালেখিতে সততাটাই চান। ফলে লেখকের লেখালেখির সাগর থেকে মুক্তো আহরণের কাজটি মূলত পাঠকই করেন। সেকারণে আমার মনে হয়, একজন মনোযোগী পাঠক মাত্রই রত্নানুসন্ধানি। পাঠকের লেখকের লেখালেখি পাঠ করে আলোচনা-সমালোচনায় রত্ন খুঁজে বের করে আনেন। আর লেখক পাঠকের এই মতামত জেনে নিজেকে ঋদ্ধ করেন।
পাঠক না থাকলে লেখকের লেখা পড়বেনটা কে তবে। আর ভালো লেখা লেখবার প্রধান শর্ত হলো ভালো পাঠক হওয়া। সেকারণে সবার আগে লেখককেই পাঠক হতে হবে। এরপর আসবে ভালো অথবা মন্দ লেখালেখির প্রশ্ন। এইখানেই লেখকের পরাজয়। কিন্তু এই পরাজয় বড় সুখের পরাজয়।
লেখকের এই পরাজয়টা খুব জরুরি বটে। লেখককে পরাজিত করতে চাই আরও আরও নতুন নতুন পাঠক।