১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট।
ভোরের আলো তখনও ফুটেনি, কিন্তু বাংলার ইতিহাসে নেমে এসেছিল এক অভিশপ্ত অন্ধকার। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি—যে ঠিকানায় জন্ম নিয়েছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন, সেদিন হয়ে গেল রক্ত ও অশ্রুর স্মৃতিস্তম্ভ।
সেখানে ঘুমিয়ে ছিলেন স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান—যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বাঙালির অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য, যিনি মাটি ও মানুষকে ভালোবেসেছিলেন অকৃত্রিম ভালোবাসায়।
কিন্তু সেই ভোরে, গুলির বৃষ্টি ও বুটের শব্দে কেঁপে উঠল দেয়াল, ছাদ, আকাশ, বাতাস। একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা নির্বিচারে হত্যা করল বঙ্গবন্ধুকে, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিবকে, শেখ কামাল, শেখ জামাল, ছোট্ট শেখ রাসেলসহ প্রায় পুরো পরিবারকে। মুহূর্তে নিভে গেল একটি জাতির উজ্জ্বলতম প্রদীপ, ভেঙে গেল কোটি মানুষের স্বপ্ন।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর কেবল একটি বাড়ি নয়—এটি বাঙালির হৃদয়ের প্রতীক। প্রতিটি ইট, প্রতিটি গাছের পাতা এখনও যেন বহন করে বঙ্গবন্ধুর হাসি, কণ্ঠ, প্রেরণা।
তবুও, হে মহান পিতা, আমাদের জাতি আবারও কেঁপে উঠল যখন ২০২৪ সালে তোমার প্রিয় ঠিকানায় ঘটল আরেকটি দুঃখজনক ঘটনা।
ক্ষমা করো, বঙ্গবন্ধু—আমরা তোমার ঘরের মর্যাদা ও শান্তি রক্ষা করতে পারিনি। জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত, ব্যথিত, অনুতপ্ত।
আজ তোমার মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা শুধু শোক প্রকাশ করছি না, আমরা প্রতিজ্ঞা করছি—তোমার অসমাপ্ত স্বপ্নের পথে আবার হাঁটব। দারিদ্র্যমুক্ত, বৈষম্যহীন, সৎ ও ন্যায়ের বাংলাদেশ গড়ব, যাতে তোমার আত্মা শান্তি পায়।
তুমি ছিলে, আছো, থাকবে—যতদিন বাংলার বাতাসে বয়ে যাবে ভালোবাসা, ত্যাগ আর স্বাধীনতার গান।
শ্রদ্ধা, বঙ্গবন্ধু। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর তোমার চিরন্তন ঠিকানা—আমাদের গর্ব, আমাদের শোক, আমাদের প্রার্থনার স্থান।