৩ নভেম্বর—বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো সকাল।
সেই সকালে রক্তে রাঙা হয়েছিল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের দেয়াল।
১৯৭৫ সালের এই দিনে, মুক্তিযুদ্ধের অগ্রণী চার জাতীয় নেতা—
তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম. মনসুর আলী, এবং এ.এইচ.এম. কামরুজ্জামান—
নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল বন্দী অবস্থায়।
তারা ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোদ্ধা,
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের স্তম্ভ।
স্বাধীনতার মাত্র চার বছরের মাথায় এই হত্যাকাণ্ড
জাতির নৈতিকতা, সততা, ও রাষ্ট্রচিন্তার ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল।
এই হত্যাকাণ্ড ছিল শুধু ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার ফল নয়,
এটি ছিল স্বাধীনতার আদর্শ ও ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্বের ওপর পরিকল্পিত আঘাত।
যে চেতনা দিয়ে দেশ জন্ম নিয়েছিল,
সেই চেতনার শেকড় কেটে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল এই হত্যার মাধ্যমে।
আজও জেলহত্যা দিবস আমাদের শেখায়—
রাষ্ট্রের ভেতরে ষড়যন্ত্র জন্ম নিলে জাতি নিরাপদ থাকে না।
ক্ষমতার রাজনীতিতে যখন মানবতা হারিয়ে যায়,
তখন সত্য ও ন্যায়বোধও বন্দী হয়ে পড়ে ইতিহাসের অন্ধকারে।
জেলহত্যা দিবস কেবল শোকের নয়, এটি বিবেক জাগরণের দিন।
আমরা যারা আজ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছি,
তাদের প্রতি আমাদের একটাই দায়িত্ব—
এই চার নেতার ত্যাগ ও আদর্শকে আমাদের জীবনে, সমাজে, রাষ্ট্রচিন্তায় জীবন্ত রাখা।
⸻
🕊️ শেষ কথা
জেলহত্যা দিবস আমার কাছে কেবল ইতিহাস নয়—
এটি এক তীক্ষ্ণ স্মৃতি,
যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—
স্বাধীনতা শুধু অর্জনের নয়, রক্ষারও প্রতিজ্ঞা।
“রক্তে লেখা দেশপ্রেমের ইতিহাস কখনো মুছে যায় না।”
