ক্ষুদ্র গল্পে এক জীবনের ভালোবাসা

0 comment 70 views

ওর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা ১৯৮৬ সালের ২৪ এপ্রিলে। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার।

এরপর জীবনের কত কত বাধা বিপত্তি চড়াই উৎরাই! সেসব পেরোতে পেরোতে কখন যে দশ বছর চলে গেল! আমরা টেরও পেলাম না।

ঠিক দশ বছর পর, ১৯৯৬ সালের ২৪ এপ্রিলের দিনটি ছিল বুধবার। ওইদিন আমাদের একসঙ্গে বাস করার স্বপ্নটি পূর্ণতা পেলো।

বিয়ে করলাম আমরা।

প্রেমময় প্রিয়তমাকে নিয়ে সংসার বাঁধলাম আমি। কিন্তু বাধা বিপত্তি চড়াই উৎরাই আমাদের ছেড়ে গেল না। নতুন রূপে নতুন করে আবির্ভূত হলো শুধু।

না, আমি সাহস হারাই নি। তবে মাঝে মাঝে জীবনে লড়াই করতে করতে কখন যে একটু হতাশা এসে গ্রাস করে আমাকে- বুঝতে পারি না!

আমি না বুঝলেও ও কিন্তু ঠিকই বুঝতে পারে। তবে সান্ত্বনা দেয় না আমাকে। শুধু কাছে এসে হাত দুটি ধরে আমার। কোনও বর্ণ শব্দ কিংবা বাক্যের ব্যবহার নয়- ওর চোখ দুটো দিয়ে আমাকে বলত, “ভেবো না তো! এই যে আমি আছি তোমার সঙ্গে। কিছুই হবে না। সব ঠিক করে ফেলবে তুমি। আমার সাহায্যও প্রয়োজন হবে না তোমার।”

নতুম করে উদ্যম ফিরে আসে আমার। নতুন জীবনের পথে নেমে আবারও হাঁটতে শুরু করি আমি। ওর নীরব চোখ দুটো আমাকে বলে, “হাঁটার ছন্দ হারিয়ো না যেন! গন্তব্যে তোমাকে পৌঁছাতেই হবে।”

আমরা দুজনে হাঁটতে থাকি। এখানে ওখানে, এদেশ থেকে ওদেশে, ভারতে, মালয়েশিয়াতে, আরও কত কত জায়গায়! সবশেষে আমেরিকায় এসে স্থির হলাম আমরা।

ততদিনে বেড়ে গেছে ভালোবাসার পরিধি। আমারা দুটি কন্যা আর একটি পুত্র সন্তানের জনক-জননী। কিন্তু ও আমার কাছে এখনও তেমনই- ঠিক যেমন ছিল ‘৮৬-এর বৃহস্পতিবারের ২৪ এপ্রিলে! অথবা ‘৯৬-এর বিয়ের দিনে!

আজও বৃহস্পতিবার- ২০২৪ সালের ২৪ এপ্রিল। আজ আমাদের বিয়ে বার্ষিকী। কিভাবে কিভাবে কেটে গেল ২৮টি বছর টেরও পেলাম না! যদিও আমার হিসেবটি ৩৮ বছরের। কেননা সেও ‘৮৬ ১৯৮৬ সালের ২৪ এপ্রিলের বৃহস্পতিবারে প্রথম দেখার সঙ্গে সঙ্গেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম- বাকি জীবনটা আমরা একসঙ্গেই থাকব।

তাই আছি এখনও। জীবনের যতটা সময় পড়ে আছে, ওর সঙ্গে, ওকে সঙ্গে নিয়ে এভাবে আদেখলেপনার মতোই থাকতে চাই। তাই যেন থাকতে পারি- এটাই এখকার প্রার্থনা।

Leave a Comment

You may also like

Copyright @2023 – All Right Reserved by Shah’s Writing