অনেকদিন চুপ ছিলাম। ভাবছিলাম, নাহ, এটা নিয়ে কিছু বলবো না।
কিন্তু আজ চুপ থাকা মানে নিজের বিবেকের কাছে একধরনের অবহেলা।
পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম নাকি বদলে এখন ‘জুলাই-৩৬ ছাত্রীনিবাস’!
যাঁর নাম শুধুই একটি নাম নয়—
একটি প্রজন্মের শিল্পবোধ, গর্ব আর বাংলা চলচ্চিত্রের আত্মা।
সুচিত্রা সেন কোনোদিন কোনো রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র ছিলেন না, কোনো মঞ্চে শাসকের নামে জয়ধ্বনি দেননি।
তাঁর পরিচয় ছিল একটিই—তিনি ছিলেন এক নিভৃতচারী কিংবদন্তি,
যিনি অভিনয় দিয়ে হৃদয় ছুঁয়েছেন, দেশকালের গণ্ডি পেরিয়ে হয়ে উঠেছিলেন বাংলার শ্রদ্ধেয় এক প্রতীক।
তা হলে এই পরিবর্তন কেন?
কেন এই অপসারণ?
এটা কি ইতিহাসকে নতুন রঙে রাঙানোর চেষ্টা?
নাকি যাঁরা নিরপেক্ষ, যাঁরা দলনিরপেক্ষ শিল্পচর্চা করেন, তাঁদের জায়গা আমাদের এই সময়টায় আর নেই?
আরও দুঃখের কথা হলো—
আজকাল শিল্পী, লেখক, সাহিত্যিক, এমনকি ধর্মীয় কলাকুশলীরাও রাজনীতির অংশ হয়ে গেছেন।
তারা দল দেখে সম্মান দেন, চেতনার বদলে ক্যাম্প বেছে নেন।
শিল্পকে দলীয় ছাঁদে ফেলে দিলে, সে আর শিল্প থাকে না—তা হয়ে যায় ক্ষমতার বাহক।
স্মৃতিচিহ্নের নাম পাল্টে সত্যকে চাপা দেওয়া যায় না।
কিংবদন্তির জায়গা ছেঁটে ফেলার চেষ্টা করলেও ইতিহাসের আসল পাতা ঠিকই তার গন্ধ ধরে রাখে।
সুচিত্রা সেন ছিলেন, আছেন, থাকবেন—
নাম পাল্টালেও হৃদয়ের পাতায় তিনি অমর।
আর আমরা যারা এই ভুলে যাওয়া সময়েও স্মৃতি ধরে রাখতে চাই,
তাদের পক্ষ থেকে বলছি—
লজ্জা। হ্যাঁ, এই একটিই শব্দ যথেষ্ট।