দেশের বাইরে ঈদের দিনটা আসে এক অদ্ভুত শূন্যতা নিয়ে।
ভোরবেলায় জানালা দিয়ে তাকালেই বোঝা যায়—এই দিনটা অন্যরকম।
কোথাও কোনো শোরগোল নেই, নেই ঈদের হঠাৎ জেগে ওঠা পাড়া,
নেই সাদা পাঞ্জাবি পরা ছোট ভাইয়ের খিলখিল হাসি,
নেই মা’র ব্যস্ত রান্নাঘর, কিংবা বাবা’র সেই চিরচেনা তাকানো—
যা বলত, “এই তো ঈদ চলে এলো…”
এই শহরে সূর্যটা ঠিকই ওঠে,
কিন্তু সেই আলোয় আমাদের শৈশবের ঈদের রঙ নেই।
গায়ে পড়ে না নতুন কাপড়ের ঘ্রাণ,
রাস্তায় নেই টুপি-পাঞ্জাবি পরে যাওয়া শিশুর মিছিল।
আকাশে শাদা কাবুতরের বদলে ওড়ে কাচের ইমারত আর যান্ত্রিকতা।
প্রবাসের ঈদ মানেই
একটা নিঃশব্দ দীর্ঘশ্বাস,
এক কাপ চায়ের পাশে জেগে থাকা স্মৃতি,
আর ফোনের পর্দায় আটকে থাকা দেশ…
একসময় মনে হয়—এই শহর তো আমাকে সব দিয়েছে,
কিন্তু সেই “ঈদ মোবারক” বলে জড়িয়ে ধরা মুহূর্তগুলো কে ফিরিয়ে দেবে?
তবু আমরা বেঁচে থাকি।
আমরা প্রবাসীরা ঈদ বানিয়ে নিই—
এক কাপ গরম চায়ের ভাপ,
বাংলাদেশ থেকে পাঠানো একটা সাদা পাঞ্জাবি,
ভাইয়ের ভিডিও কলে হাসিমুখ,
আর ভেতর থেকে উঠে আসা সেই চিরন্তন ডাক—
“মা, আজকে যদি তুমি পাশে থাকতে…”
তাই বলি,
যেখানেই থাকুন না কেন—নিউ ইয়র্ক, ক্যানাডা, মালয়েশিয়া কিংবা লন্ডন—
আপনার ভেতরের বাংলাদেশটাকে ভুলবেন না।
আপনার ঈদ আপনার স্মৃতির ভেতরেই সবচেয়ে বেশি জীবন্ত।
একটু ভালোবাসা দিন নিজেকে, আর চারপাশের মানুষদের।
যতটা পারেন, একে অপরের পাশে থাকুন।
এই অচেনা শহরেও একদিন গড়ে উঠবে নতুন স্মৃতির ঈদ।
ভালো থাকবেন 🤗 ভালোবাসবেন।
ঈদ মোবারক, কুইন্স থেকে—সকল হৃদয়ের ঠিকানায়।
