আমাদের এক বন্ধু ছিল। সে অনেক কিছু করে ফেলতে পারত। অনেকেই পারে আসলে। কিন্তু আমাদের সে বন্ধুটির বিশেষত্ব ছিল সে যে কোনো কিছুই অন্যদের চেয়ে ভালো পারে। আর সে যে পারে এটা জানাতে কোনো কার্পণ্য করত না। প্রায়ই দেখা যেত কারও না কারও দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। সে দৃশ্য দেখে আমরা হাসতাম।
নিজেকে আসলে প্রমাণ করার কিছু নেই। যিনি যে কাজটি পারেন সেটা তিনি জন্ম থেকে শিখে আসেন না। প্রয়োজন তাকে দিয়ে শিখিয়ে নেয়। ফলে কোনো একটি কাজ আপনি মুন্সিয়ানার সঙ্গে করতে পারেন- এটি ব্যাখ্যা করে অন্যদের জানাবার কিছু নেই। কেননা যাকে আপনি জানাতে চাইছেন তিনি হয়ত ভিন্নধারার কিছু একটা আপনার চেয়েও বেশি রকমের মুন্সিয়ানায় করে ফেলতে পারেন।
আইনস্টাইনের সেই বিখ্যাত কথাটি মনে আছে তো? সেই যে বানর আর মাছকে যদি বলা হয়, যে আগে গাছে চড়তে পারবে সে চ্যাম্পিয়ন- তাহলে কি তাকে প্রতিযোগিতা বলা যাবে? মাছ গাছে চড়তে না পারল কিন্তু বানর তো মাছের মতো সাঁতরাতে পারবে না। সাঁতরাতে গেলে ডুবে গিয়ে অমূল্য জীবনটি হারাবে।
এজন্যেই বলছিলাম, নিজেকে প্রমাণ করতে যাওয়ার কিছু নেই। আর যিনি যোগ্য তাকে তার যোগ্যতা ব্যাখ্যা করতে হয় না। তার কাজই তার যোগ্যতার মাপকাঠি। সেকারণে অন্যদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেভাবেই চলা দরকার।এবং অবশ্যই নিজের সততা বজায় রাখুন। আপনাকে দিয়ে কারও উপকার না হোক- ক্ষতিটা যে না হয়।
যারা আপনাকে ভুল বুঝছে তবে তাদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে ভুলটা ভাঙানোর চেষ্টা করুন। তাদের মঙ্গল কামনা করুন। তাদেরকে ভুল বুঝতে দিন। তারপর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটিকে দেখতে আয়নায় তাকান। তাকে বলুন, নিশ্চয়ই তার কোনো আচরণ এর জন্যে দায়ি। আচরণগত দিকগুলো শুধরে নিতে চেষ্টাটা করুন।
নিজেকে প্রমাণ করার কিছু নেই আসলে। নিজের উপস্থিতিকে পাশ কাটিয়ে শুধু ভাবুন আপনি যদি অনুপস্থিত থাকতেন- তাহলে কি হতো? পৃথিবীর ঘূর্ণন কি থেমে যেত? অথবা থেমে যেত অন্যদের দৈনন্দিন জীবন?
হ্যাঁ, ঠিক এতটাই ক্ষুদ্র আপনি, আমিও। আমরা সকলেই।